২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দিরের কাজ শুরু হয়েছিল। এবার তিন বছর পর সেই পূর্ণ লগ্ন অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ইতিহাস তৈরি করা প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমুদ্র সৈকত দিঘাতে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করার জন্য সোমবার ২৮ এপ্রিল পৌঁছে গেছেন সেখানে। বুধবার ৩০ এপ্রিল উদ্বোধনের আগের দিন অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার এই মন্দিরে নিয়ম মেনে হয় মহাযজ্ঞ। বঙ্গোপসাগরের তীরে রাজ্যের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র দিঘারতে ধর্মীয় মন্দির তৈরি এই মুহূর্তে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
জানা গেছে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রায় ২৩ একর জমিতে এই জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সালের অক্ষয় তৃতীয়া, তিন বছরে কাজ কমপ্লিট কয়েকশো কোটি টাকা ব্যয় এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছে। পৌরাণিক রীতি-নীতি মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দিরটি । এই জগন্নাথ মন্দিরে যাতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত করা যায় তার ও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনটি রথ তৈরি করা হয়েছে। এই জগন্নাথ মন্দির আদ্ধাত্মবাদ ও সম্প্রীতির মিলন মন্দির এমনই মত খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর।
৩০ এপ্রিল এই বহু আকাঙ্ক্ষিত জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে দিঘাতে তিল ধারনের জায়গা নেই । ইতিমধ্যে বিভিন্ন হোটেল ও লজ গুলি কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আলোতে সেজে উঠেছে সমগ্র দিঘা। বুধবার লক্ষ লক্ষ রাজ্যবাসী সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষজন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন দিঘাতে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরে মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও মন্দিরের উদ্বোধনের দিকে।
মঙ্গলবার প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দিরের চূড়াতে শ্রীচক্রে পবিত্র ধ্বজা যখন উড়তে শুরু করে তখন সাক্ষী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা মন্ত্রী ও বহু সাধু সন্ন্যাসীগণ সহ আপামর মানুষজন। সত্যিই ইতিহাস তৈরি হল। কে করল কারা করলো। কেন করলো। এটা বড় কথা নয় । আগামী প্রজন্ম দেখবে দিঘাতে জগন্নাথ মন্দির । দিঘা খুবই বড় মাপের পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় বছরের বিভিন্ন সময় এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেড়াতে আসেন। প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র আগামী দিনে বড় আকার ধারণ করবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দিঘাতে তৈরি জগন্নাথধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রে হোম যজ্ঞ অনুষ্ঠান যেমন চলে একই সাথে পুরোহিতদের বিশ্ব শান্তি এবং মানব কল্যাণের প্রার্থনা করতেও দেখা যায়। এদিন পুরী, ইসকন ,দক্ষিণেশ্বর, আদ্যাপীঠ ,লোকনাথ ধাম, বেলুড় মঠ সহ একাধিক স্থান থেকে প্রতিনিধিরা এসেছিলেন দিঘাতে। বুধবার প্রভু জগন্নাথ দেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠার মূল অনুষ্ঠান ও বিকেলে দার -উদঘাটন। আর পরে আরতি ও বিশেষ পুজো।
